মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেগুলোর আবেগ অনুভূতি গুলো ধীরে ধীরে শেষ হয় যায়। একটু বড় হওয়ার পর প্রথমে তাদের টেনশন থাকে নিজের পরিবারকে কিভাবে সুখী রাখা যায়। বাবা হয়ত সরকারি চাকরিজীবি বা অবসর গ্রহণ করেছে। নিজের পড়াশুনার খরচ নিজেকে বহন করতে হয় টিউশনি নামক পেশা দিয়ে বা পার্ট টাইম কোন জব করে। নাহলে যে মাঝ পথে পড়াশুনাটা বন্ধ হয়ে যাবে।
তারপর শুরু হয় এক নতুন যুদ্ধ নিজের পড়াশুনা, টিউশনি-কোচিং ক্লাস, ভার্সিটিতে ক্লাস। সব মিলিয়ে একটি যান্ত্রিক আর রোবটিক জীবন তাদের।
এর মাঝে ঈদ আসে। হয়ত নিজের জন্য কিছু না কিনে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে টিউশনির সামান্য টাকাটি দিয়ে বাবা-মা জন্য পোশাক কিনে নেয়। বাবা-মা যখন বলে, কিরে তুই কিছু কিনবি না? ছেলেরা তখন চোখের পানি আড়াল করে হাসি-মাখা মুখে বলে, আরে আমি তো বড় হয়ে গেছি। ড্রেস আছে অনেক। কিনতে হবে না।
হয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের দেখা মিলে প্রেম নামক একটি অনুভূতির সাথে। আহা! অনুভূতিগুলো। দুইজনের একত্রে প্রথম রিকশা চলা- বৃষ্টিতে ভিজা, পরবর্তীতে সময় নিয়ে নানা ভাবনা, নানা কল্পনা। বছর ঘুরতেই প্রিয় মানুষটির বিয়ে হয়ে যাবে নিজ চোখের সামনে। ছেলে যোগ্য নয়, ছেলের টাকা নেই, ছেলের ব্যবসা নেই, ছেলে ভালো চাকরি করে না, ছেলের ক্যারিয়ার নেই এরুপ নানা অভিযোগের মাথায় নিয়ে ছলছল চোখে প্রিয় মানুষটার থেকে দূরে চলে যায়। চুপ করে সব চাপা দিয়ে সহ্য করবে ছেলেটা।
এরপর শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। নিজের জীবন, ক্যারিয়ার, পরিবার। হয়ত ছেলেটি চেয়েছিলো লেখক হতে কিন্তু পরিবার বা সমাজের দিকে তাঁকিয়ে কোন কপোর্রেট জবে ঢুকবে।
সময় চলে যাবে। মধ্যবিত্ত ছেলেগুলো সারাদিন থাকবে হাসি-খুশি কাজে বিজি। মাঝ রাতে ভেঙ্গে যাবে এধুম। নিজের স্বপ্নের সাথে বাস্তব মিলিয়ে দেখবে। তখন নিজকে মনে হয় একাকী। কাঁদলে যেন শব্দ না হয় তাই মাথার উপর বালিশ দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদবে কিছুক্ষণ। রাত যত গভীর হবে কান্না’র মাত্রা বাড়বে। এক সময় ঘুমিয়ে যাবে। আবার শুরু হবে যান্ত্রিক জীবন।
তবুও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা বলবে জীবনটা সুন্দর #life_is_beautiful। আহা আজ এই বসন্তে।